পথ নির্দেশনা : চাকরির প্রস্তুতি গ্রহন

মূল লিখাটি শ্রদ্ধেয় ইমতিয়াজ হোসেন ইমু ভাই এর। পরিবর্তন-পরিবর্ধনের কাজ করেছেন এই অধম।

ভূমিকা:

কয়েকদিনের মধ্যেই সবাই মার্কেটে যাবেন। তরকারি বা জামা-কাপড়ের মার্কেট না। জব মার্কেট, যেখানে বিক্রেতা হচ্ছেন আপনি, ক্রেতা আপনার নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। মার্কেটে যাওয়ার প্রাক্কালে অনেকেরই জিজ্ঞাসা থাকে,  ভাই কি শেখা উচিত? আমার জ্ঞান সীমিত। আমি সীমিত জ্ঞানেই উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি। মার্কেটের বর্তমান অবস্থা আর আমাদের অবস্থান সম্পর্কে একটু ধারণা থাকা প্রয়োজন। 

কি টেকনোলজি চলছে, কোনটা স্ট্যাবল, কি তাদের স্কোপ, প্লাটফর্ম সব বিষয় বিবেচনা করতে হবে। অনেকেই ভাববে ভাই ফ্রেশার হয়ে ঢুকবো। ছুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বের হবো। সমস্যা হলো মার্কেটে অনেক কোম্পানির (ভার্সিটির) সূঁচ আছে। ধারালো তাদের আগা। আপনি চেষ্টা করলেও সবসময় পেরে উঠবেন না। অফিস পলিটিক্স, কলিগ, পরিবেশ, ওয়ার্ক ইনভায়রোনমেন্ট অনেক কিছুই প্রতিকূলতা সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য কিছু বিষয়ে আগে থেকেই জ্ঞান থাকা দরকার। 


কি কি প্ল্যাটফর্ম অাছে?:

কি কি প্ল্যাটফর্ম অাছে সেটি দেখার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে কোনো একটি জব পোর্টালে চোখ রাখা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জব পোর্টাল বিডিজবস কে ফলো করলে কয়েকটাইপের জব দেখতে পাবেন। যেমনঃ-
  • Web developer 
    • Frontend 
    • Backend 
    • FullStack 
    • DevOps 
  • SQA ( software quality assurance) 
  • UI Developer 
  • UX Developer 
  • Software Architect 
  • Graphics Designer 
  • Game Developer 
  • iOS - Android 
  • Javascript Developer 
  • Business Analyst 
  • Network Engineer 
  • Database Administrator (DBA) 
  • Data Scientist 
  • Telecom Sector 


কোনটার স্কোপ কি?:

নীচে ধারাবাহিকভাবে সব কয়টি টেকনোলোজির সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে।


Web developer:

সবাই ক্যরিয়ারের শুরুতে এটাকেই মূল চাকরির উপায় ধরে নেয়। আমিও ব্যাতিক্রম না। ওয়েবে কয়েক ধরণের আবার ভাগ আছে। সেটা উপরে বলেছিই। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে একটা ওয়েব এ্যপ্লিকেশন বানানো থেকে শুরু করে এই ইন্টারনেটে এ্যাবেইল্যাবল করার সব কাজ। এখন এ ওয়েব ডেভেলপার বলতে কি বুঝি? ওয়েব রিলেটেড যা কিছু মোটামুটি যত কাজ আছে, ওয়েব ডেভেলপারের কাজ হচ্ছে সেগুলো করা। যেমনঃ কন্টেন্ট ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম, ইনভেন্টরি, POS, সোশ্যাল মিডিয়া ব্লা ব্লা। একটা ওয়েব এ্যাপ্লিকেশনের এই কাজগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
  • Frontend
  • Backend

এই ওয়েব এ্যপ্লিকেশন গুলো বানানো হয় কি দিয়ে? অনেক ল্যাঙ্গুয়েজ আছে। বিভিন্নটার কাজ বিভিন্ন। সহজলভ্যতার কথা যদি চিন্তা করি তবে প্রথমেই বলতে হবে PHP এর নাম। এরপরে আরো অনেক আছে। হাইলেভেলের কথা যদি বলি তবে Java, C#। স্ক্রিপ্টিং এ Python, PHP, Ruby। স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজের সাথে জাভা বা সিশার্পের পার্থক্য খুঁজে আপনারাই খুঁজে নিন।



Backend:

উপরে বর্ণিত ল্যাঙ্গুয়েজ গুলো ব্যাকএন্ডের জন্যই। ব্যাকএন্ড মানে সিস্টেম লজিক যা ইউজার দেখবে না। যেমন বাটন ক্লিকে আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরী হচ্ছে। ইউজার শুধু বাটন দেখবে। নতুন ইউজারের ডাটা কিভাবে ডাটাবেসে ঢুকছে তা দেখবে না। এটাই ব্যাকএন্ড। ব্যাকএন্ড ডেভেলপাররা আবার প্রত্যেকে বিভিন্ন ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করেন। যেমনঃ

PHP
  • Laravel (বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়)
  • Codeigniter
  • CakePHP
  • Symphony
  • Zend
Java
  • Spring
  • Struts
  • JSF
  • Hibernate (Hibernate কে বলা হয় RDMS tool)
Python
  • Django
  • Flask
  • DRF
Ruby
  • Rails
C#
  • .NET MVC
  • EntityFramework

এই ফ্রেমওয়ার্ক কি?

সহজ ভাষায় আপনার কাজ সহজ করার জন্য একটা টুল। যেমন ধরেন: আপনি RAG ডে এর জন্য গেঞ্জি বানাবেন। এখন গেঞ্জির ডিজাইন যখন দোকানদারকে দেন তখন সে কিন্তু প্রত্যেক গেঞ্জির জন্য বারবার ওই ডিজাইনের ছাঁচ বানাবে না। সে ওই ছাঁচ বানাতে প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে একটা ইউনিভার্সাল ছাঁচ বানাবে যা সব ওই গেঞ্জির criteria কে fulfill করবে। অর্থাৎ ১০ গেঞ্জি বানালেও যে ছাঁচ তেমনি ১০০০ গেঞ্জি বানালেও একই ছাঁচ। ফ্রেমওয়ার্ক অনেকটা এরকম। সবকিছু প্যাকেট করা আছে। প্রয়োজন মতো নিবেন আর প্যাকেট খুলে সারপ্রাইজড হবেন। এই আনালজির সাথে মিলালে আমরা বলতে পারি Java'র Spring MVC Framework হচ্ছে MVC বেইজড ওয়েব এ্যপ্লিকেশন বানানোর একধরনের ছাঁচ বা টেম্পলেট। আপনি ওদের কনভেনশন অনুযায়ী ফাইল স্টাকচার বানাবেন এবং কোড করবেন, একটি ওয়েব এ্যপ্লিকেশন হয়ে যাবে।

কোন ল্যাঙ্গুয়েজ শিখবেন বা কোন ফ্রেমওয়ার্ক? এটা জানার জন্য আপনাকে প্রথমে বুঝতে হবে আপনার প্রজেক্ট কত বড়, প্রজেক্টের স্কোপ কি। সব কাজ যদি এক ল্যাঙ্গুয়েজে হতো তবে এতো ল্যাঙ্গুয়েজের দরকার হতো না। ফেসবুক PHP তে এটা ঠিক না। এর বিভিন্ন লেয়ারে বিভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজের ব্যবহার রয়েছে। python আছে, scala আছে। গিটহাবের মতো ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম Ruby on Rails এ বানানো। ব্যাংকিং সফটওয়্যারগুলোর অধিকাংশই জাভা, C# এর দ্বারা তৈরী। বড় অ্যাপ্লিকেশনের জন্য জাভার কোড ভালো মেইনটেইন করা যায় যায়। এজন্য প্রায়োরিটি বেশি। বাংলাদেশে C# এর ভালো চাহিদা আছে। ফ্রেশার হিসেবে জাভাতে বাংলাদেশে স্ট্রাগল করতে হয় বেশি।



Frontend?:

সহজে বলি, আপনার ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহারকারিরা যা দেখে তাই ফ্রন্টএন্ড। ফেসবুকের যা দেখছেন তা ফ্রন্ট এন্ড। আপনার নটিফিকেশন আসছে এটা আপনি যে সুন্দর করে দেখছেন সেটা ফ্রন্টএন্ড, আপনার কাছে যে নটিফিকেশন আসছে সেটার ডাটা পাঠাচ্ছে ব্যাকএন্ড।
মূলত ফ্রন্টএন্ড বলতে আমরা বুঝি HTML, CSS, Javascript ইত্যাদি। আসলে এদেরও অনেক ফ্রেমওয়ার্ক আছে। যেমন ধরেন CSS এ Bootstrap, SASS. Javascript এ তো A-Z দিয়ে সব বর্ণেই প্রায় ফ্রেমওয়ার্ক আছে। বাজারে চলছে কি? বাজারে চলছে Fogg. না ভাই Fogg না চলছে AngularJS, ReactJS, EmberJS, MeteorJS, BackboneJS, NodeJs (serverside), AureliaJS, VueJs

কোনটা শিখবেন তাই তো? AngularJS, ReactJS কড়া ফর্মে আছে। React ফেসবুকের আর লার্ণিং কার্ভ খুব সহজ। ডকুমেন্টেশন ভালো, স্ট্যাবল রিলিজ আছে। অন্যদিকে Angular গুগলের, লার্ণিং কার্ভ শুরুতে সহজ, তারপরে হার্ড। অ্যাংগুলার ১ বেশ স্ট্যাবল কিন্তু deprecated হয়ে যাবে। মানে সাপোর্ট থাকবে না। অন্যদিকে Angular 2 অন্যসব কিছুর চেয়ে ফাস্ট। কিন্তু স্ট্যাবল না, ১ থেকে পুরোপুরি চেঞ্জ ২ নাম্বার ভার্সন। সুতরাং যারা ১ করেছে তাদের নতুন করে শিখতে হবে ২ একটা নতুন ফ্রেমওয়ার্ক হিসেবে। VueJs নিয়ে PHP মহলে বেশ নামডাক আছে।

ব্যবহার করবেন কিভাবে সেটা ভাবছেন তো? আজকাল সব ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন গুলো হয়ে যাচ্ছে API বেইসড। API জিনিসটা হলো একটা কন্ট্রাক্ট পেপার। সেখানে লেখা থাকে যে আপনার কি কি জিনিস আছে, তাদের কে কিভাবে আপনি হস্তগত করবেন, কিভাবে ব্যবহার করবেন। অর্থাৎ API এ ওয়েব অ্যাপের বিভিন্ন ফিচারগুলো একটা লিস্ট আছে। আপনি কল করবেন আর পাবেন। কিভাবে কল করা হয়? API প্রোভাইডার এর কাছে আপনি API এন্ড পয়েন্ট(URL) পাবেন, এবং প্রয়োজনীয়া ডাটা সহ এই এন্ড পয়েন্টে হিট করবেন। ঠিক যেমন কন্ট্রাক্ট করবেন আর মালামাল নেবেন। API বেইসড অ্যাপের সুবিধা কি? সুবিধা হলো API শুধু আপনাকে ডাটা দিচ্ছে, কোনো ধরনের ভিউ(Html বা অন্যান্য UI) পাঠাচ্ছে না। এই কারণে একই API একই ওয়েব অ্যাপ, মোবাইল অ্যাপ সব জায়গায়ই ব্যবহার করতে পারবেন। C# দিয়ে বানানো API আপনি আপনার Java বা Php যে কোনো ধরনের এ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহার করতে পারছেন। এখন, API হলো কোন ধরণের ভিউ ছাড়া। তাহলে ইউজার কল করবে কিভাবে? এখানেই আসে আমাদের Frontend Framework. সে আপনার ভিউ হিসেবে কাজ করে। তারপরে এই API এর URL কে কল করে। যা ডাটা আসে তা আবার Frontend Framework ইউজারকে দেখায়। মোবাইলেও একই। মোবাইলেও সব কিছু API এর মাধ্যমে হয়।



UX Developer:

এদের বাজারে ভালো চাহিদা আছে। এই কাজের জন্য দরকার প্রচুর Imaginary Power. আপনাকে বিভিন্ন সাইট/পেজ ঘুরতে হবে। বুঝতে হবে ইউজার কি চায়। সে অনুযায়ী প্রোডাক্ট লেআউট বানাতে হবে। এগুলার জন্য বিশেষত ট্যুল ব্যবহার করতে হয়। Adobe Photoshop/Illustrator. এরা Brochure, Flyer, Visiting Card, Web Template, Logo এসব বানায়॥ এদের স্বর্গভুমি হলো: 99designs.com



UI Developer:

সবাই এদের তুচ্ছ জ্ঞান করে। এরা আসলে একেকটা মাল। এদের উপর আপনার কাজের সবকিছু নির্ভর করে। কারণ এদের বানানো জিনিসই ইউজার খাবে। আপনি ব্যাকএন্ডে কেমনে ডাটা সেভ করতেছেন সেটা ইউজারে মাথা ব্যাখা না। তার মাথাব্যাথা হলো যে বাটনে ক্লিক করলে ডাটাটা সেভ করছেন সেটা কেন হাতের কাছে নেই। এই হাতের কাছে আনার দায়িত্ব এই ব্যাটার। ইউজাররে সুন্দর একটা বাটন তার হাতের নাগালে HTML, CSS, JS দিয়ে তুলে ধরাই এদের কাজ। অর্থাৎ একজন UX developer একটা ওয়েবসাইটের টেমপ্লেট .psd ফরম্যাটে বানায়া দিলো। এখন UI developer এর কাজ হবে এটাকে responsive করে মানে সব ডিভাইসের জন্য compitable করে HTML, CSS, JS লেখা। বাংলাদেশে যেহেতু সবাই এদের তুচ্ছ জ্ঞান করে সেহেতু স্যালারি কম এদের।



SQA Engineer (Software Quality Assurance Engineer):

বাংলাদেশে সব মাঝারি থেকে বড় কোম্ম্পানিতে এদের চাহিদা আছে। কাজটা কি? ধরেন উপরে বর্র্ণিত ডেভেলপাররা ফেসবুক বানিয়েছেন। এখন এর সবকিছু ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা টেস্ট করে তারপরে মার্কেটে ছাড়তে হবে। বাটন কাজ করছে কিনা, ফ্রেন্ড রিকু পাঠালে আরেকজন পাচ্ছে কিনা। এই টেস্ট গুলো করার কাজ করেন এই ভদ্রলোকেরা। Blackbox test, White Box testt, Salenium test, Unit test, Automotion test এবং সবার শেষে Manual test। আজকাল সব বড় ল্যাঙ্গুয়েজই তাদের ফ্রেমওয়ার্কে Test code লেখার অপশন দেয়। এটাকে বলে automated testing. ডেভেলপাররাই তাদের ফিচারের কোড টেস্ট করার জন্য টেস্স্ট কোড লিখবে। আগে টেস্ট কোড পরে ফিচার কোড লেখার অভ্যাস বা সিস্টেম হলো TDD। SQA দের কি ধরনের দক্ষতা লাগে? বেসিক প্রোগ্রামিং জ্ঞান তো অবশ্যই লাগবে। এর সাথে সাথে টেস্টিং নিয়ে ভালো আইডিয়া থাকতে হবে। কোনটা কোন ধরনের টেস্টিং, কোন ধরনের টেস্টিং এ এ কি ধরনের কাজ হয়। টেস্ট কেস কি, কিভাবে টেস্ট কেস লিখতে হয় এই সব।



Android Developer:

ঢাকায় যেকোন একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির নিচের একটা গাছ ধরে ঝাঁকি দেবেন, পাতার বদলে অনেকগুলা Android ডেভেলপার বের হবে। দক্ষ কজন তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কোড করবেন Java দিয়ে। নরম্যাল HTML, CSS এর বদলে ব্যবহার করবেন GridView, LayoutView, ListView. আমি কখনো এ প্লাটফর্মে কাজ করি নি। তবে বলতে পারি যে বাংলাদেশে সবাই Andorid SDK দিয়ে Hello World লিখতে পারলেই নিজেকে Android Dev ভাবা শুরু করে। ফিল্ড টা অনেক ভাস্ট। বাজারে চাহিদাও আছে। কিন্তু উপযুক্ত লোকের খুব অভাব। কিছুদিন আগে Android ডেভেলপমেন্টের জন্য গুগল তার নিজস্বঃ ল্যাঙ্গুয়েজ Kotlin নিয়ে আসছে।



iOS Developer:

Aristocrat মানুষের জিনিস। কোড করবেন Objective C অথবা Swift এ। আগে মানুষ Titanium এ করতো। কিন্তু হঠাৎ করে titanium কমার্শিয়াল হয়ে গেলো। বাদ। Swift is good. Library rich. মানুষ কোড করছে। বাংলাদেশে কাজও হচ্ছে বেশ। বাজারে চাহিদা আছে ডেভেলপারদের। অ্যাপস্টোরে অ্যাপের চাহিদা আছে। Android এর মতো অপ্রয়োজনীয় অ্যপ দিয়া মার্কেটপ্লেস ভরা না। তাই মর্যাদার সাথে ডেভেলপার এবং ইউজার ব্যবহার করছে।



BA(Business Analyst):

সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে যেখানে অন্যান্য প্লাটফর্মগুলোর সুনির্দিষ্ট Carrier Path ও Job Description আছে, BA দের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির জন্য Carrier Path ও Job Description ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। একজন তুখোড় BA ক্লায়েন্টের রিকয়ারমেন্টগুলো তাদের থেকে বুঝে নিয়ে তার টিমের সফটওয়্যার ডেভোলপারদের বুঝিয়ে দেন। তাই বলা যায় একজন BA হচ্ছেন ক্লায়েন্ট এবং টেকনিক্যাল লোকজনের মধ্যে ব্রিজ সরূপ। BA দের প্রধান দক্ষতা হতে হয় যোগাযোগের দক্ষতা, যার কমিউনিকেশনের স্কিল যত ভালো তার ভালো করার সম্ভবনা তত বেশি। এই গোত্রের লোকজনদের ইংরেজিতে খুবই দক্ষ হতে হয়। এই কারণে দেখা যায় প্রথম সারির কোম্পানিগুলো BA নিয়োগের ক্ষেত্রে ইংরেজি মাধ্যমে যারা পড়াশুনা করেছেন তাদের প্রাধ্যান্য দেন। আমি যে কোম্পানিতে এখন আছি এখানকার প্রায় ৯৮ ভাগ BA দের পড়াশুনার মাধ্যম ছিল ইংরেজি।



DevOps:

এদের চল বাংলাদেশে এখনো হয়ে উঠেনি। তবে উন্নত দেশে এদের আকাশচুম্বি দাম। এদের কাজ সব সার্ভারে। এরা আপনার কোড বেইস ডেভেলপমেন্ট স্টেজ থেকে নিয়ে প্রোডাকশনে দেবে। তার জন্য সার্ভারে যে যে কাজ করা দরকার তা করবে। কোন একস্ট্রা সার্ভিস, যেমন ধরেন আপনার সফটওয়্যারটি একই সাথে কত মানুষের লোড নিতে পারবে সেটা অনুযায়ূী সে লোড ব্যালেন্সার সার্ভিস কনফিগার করবে। ডাটাবেস যদি কোন কারণে মরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে তার ব্যাকআপ নেয়ার দায়িত্বও এই লোকের। FullStack: এরা ভাই মানুষ না। পশু। এরা সব পারে। মানে যখন দরকার সে Frontend Dev, দরকারে সে Backend Dev, দরকারে সে DevOps. সমস্যা হলো বাংলাদেশে সবাই এতোই ট্যালেন্ট যে এরা এদের স্বল্প জ্ঞান নিয়েই FullStack Dev.



Software Architect:

সত্যি বলতে বাংলাদেশে গুটিকয়েক আছে। এদের কাজের লেভেল অন্য গ্রহের। আমার কাছে এরা CSE এর রকেট সাইন্টিস্ট। আমি এদের সম্পর্কে বলে নিজে ছোট হতে চাচ্ছি না, নাম দেখে ফলে পরিচয়। অভিজ্ঞতা আর একাগ্রতা একজন Software Architect হয় উঠার চাবিকাঠি।



Data Scientist:

কঠিন টার্ম। কঠিন ফিল্ড। হার্ড ওয়ার্ক করতে করতে জীবন শেষ। ডাটা স্ক্রাপিং, ডাটা ক্লিনিং করতে করতে জীবন শেষ। ভাববেন বুঝি এই শেষ। এই শেষ শেষ না, কষ্ট সবে শুরু। এর পরে ভিজ্যুয়ালাইজেশন, ইমপিউটেশন, মেশিন লার্ণিং, স্ট্যাটিসটিকস, ম্যাথ, অ্যালগোরিদম কি নাই। হতাশ হওয়া যাবে না। সামনে এরই যুগ। আপনি আগায় থাকেন। কষ্ট হবে। কেষ্ট পাবেন পরে। বাংলাদেশে টেকনোলজি আসে ৩ বছর দেরীতে। ২০১৩ সালে পাইথনের Django ফ্রেমওয়ার্ক বাজার কাপাইছি ওয়েস্টার্ণ ওয়ার্ল্ডে। সেখানে আমরা ২০১৬ এর মাঝামাঝি এসে পাইথন নিয়া লাফানো শুরু করেছি। এই ফিল্ডে আপনার জন্য সবচেয়ে বেশি যেটা লাগবে সেটা হলো Python, R. Data Scraping এর জন্য পাইথনের জুড়ি মেলা ভার। আর R ব্যবহার করে ডাটার উপর অ্যানালাইসিস চালাবেন। দুর্দান্ত সার্ভিস। বাংলাদেশে হাতে গোণা কয়েকটা কোম্পানি বিগ ডাটা নিয়ে কাজ করে। Hadoop এর যুগ শেষ প্রায়, এখন Apache Spark এর যুগ। Scala ও কম যায় না। আমি টার্ম বলে যাবো। পড়া লেখার দায়িত্ব আপনার। বাজার বিচার আপনারে করতে হবে। কিছু কোম্পানি চুপেচাপে কিছু কাজ করছে। সেটাও লোকমুখে শোনা। পৃথিবীতে সবেচেয়ে বেশী বেতন নেওয়া পোস্ট হচ্ছে Data Scientist



DBA(Database Administrator):

এটাও একটা চ্যালেঞ্জিং জব। ডাটাবেস ডিজাইন, ইনডেক্সিং, রিলেশনশিপ, কানেকশন পুলিং, মাল্টি ট্যানেন্সি এসব এই ভদ্রলোকের কাজ। আপনি টার্ম বুঝতে পারছেন না? এতো বড়ো পোস্ট পড়ে এমনিতেই হতাশ হয়ে যাবার কথা। টার্ম ব্যাখ্যা করা শুরু করলে ভিমড়ি খাবেন।



এছাড়াও কিছু আরো কাজ আছে।

  • (১) Cross-platform Mobile Application: এদের মানে হলো, এমন একটা অ্যাপ বানানো যেটা একই সাথে iOS এবং Android এবং Windows ফোনে চলে। এটার জন্য আপনার কাছে অনেক অপশন আছে। বহুল প্রচলিত হলো, Ionic (Angular1,2), NativeScript (Angualr 2), Xamarin
  • (২) রিসার্চার: সবাই এটা হতে পারেনা। এটা সবার জন্যও না। অনেক ধৈর্য পড়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। বিশ্লেষণী ক্ষমতা থাকতে হবে। আমার এতো ক্ষমতা নেই। আমি এই কাজে তাই পা বাড়াইনি। তবে Natural language Processing নিয়ে একটা কাজ করেছিলাম ব্যাচমেট রাতুলের সাথে। ডাটা অ্যানালাইসিস এর একটা কাজ। তখন তো এতো কিছু জানতাম না। নাহলে হয়তো কিছু একটা করা যেতো।
  • (৩) বাজারে অনেকেই Hype driven development করে। যেমন: বলবে OOP এর যুগ শেষ, এখন Functional programming এর যুগ। Elixir শিখো। Clozure শিখো। কেউ বলবে Go lang দেখো। খুব Promising. কানেও নিবেন না। সব কথার উর্ধে একটা কথাই। কোড করতে হবে বাছা। ঘাড় গুঁজে প্রোগ্রামিং করতে হবে। কন্টেস্ট করতে হবে। যেটা মনে চায় কর বাপ, কিন্তু কোডিং বাদ দিস না। পেট আপনা আপনি চলবে। একটা কথা বলি, “kids, don't buy drugs. Become a pop star, and they give you them for free!” তেমনি পেটের দায়ে কোড কইরো না বাচ্চারা, কোডার হও দেখবা ওরাই পেটের জিনিস দিয়া যাইতেছে।

অনেক কথা বললাম, অনেক ভুল বলেও থাকতে পারি। মনে নেয়ার কিছু নাই। Happy Coding.